‘Ray’ — Web Series Review from Khobor Dobor
বাংলায় জঘন্য বলে একটি শব্দ আছে জানেন তো অর্থাৎ অতি বিশ্রী বা অতি কুৎসিত এই ক্ষেত্রেও প্রদর্শনীটা ঠিক এইরকমই হয়েছে। সত্যজিৎ রায় এমন একজন ব্যক্তি ছিলেন যার ব্যাপারে যতই বলা হয় ততই কম বলা হবে, এক কথায় যাকে বলে “সিনেমার জনক” তিনি ছিলেন তাই।
Ray সিরিজটা সদ্য 25 জুন 2021 রিলিজ হওয়া একটি ফিল্ম সিরিজ যার নির্দেশনা দিয়েছেন শ্রীজিৎ মুখার্জী, অভিষেক চৌবে, ভাসান বালা । এই ফিল্ম সিরিজে রয়েছে সত্যজিৎ রায়ের লেখা চারটি ছোটগল্পে আধারিত সিনেমা। ছোট গল্প গুলির নাম হল-
- বারিন ভৌমিকের ব্যারাম
- বিপিন চৌধুরীর স্মৃতিভ্রম
- স্পটলাইট
- বহুরূপী
নেটফ্লিক্স এ রিলিজ হওয়ার এই সিরিজ নাকি সত্যজিৎ রায়ের 100 তম জন্মবার্ষিকী ট্রিবিউট; ট্রিবিউট না দিলেই হচ্ছিল না এত বড় একজন ব্যক্তিত্ব কে ট্রিবিউট দেওয়া চাট্টিখানি কথা, সিনেমা নিয়ে ছেলেখেলা করাটা এদের স্বভাব দাঁড়িয়ে গেছে।
সত্যজিৎ রায়ের লেখা গল্পের যদি সিনেমা করতেই হয় তাহলে মূল গল্প থেকে সরে যাওয়ার তো কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছিনা, হ্যাঁ প্রটেম মডারেশন আপনি দেখাতে পারেন যেমন ওল্ড ডায়াল টেলিফোনের বদলে স্মার্ট ফোন। এই ক্ষেত্রে ‘হাঙ্গামা হে কিউ বারপা’ এবং ‘বহুরূপী’ ছাড়া বাকি দুটি সিনেমা ‘স্পটলাইট’ এবং ‘ফরগেট মি নট’ দুটিতেই সম্পূর্ণ চেঞ্জ আনা হয়েছে যার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। আসুন প্রত্যেকটি সিনেমা বিস্তারিত জানি কেমন হলো –
বিপিন চৌধুরীর স্মৃতিভ্রম
ফরগেট মি নট
(1 / 5 )
সত্যজিৎ রায়ের লেখা আসল গল্পটি পড়লে বুঝতে পারবেন সিনেমার গল্পের সাথে কতটা অমিল আছে; আমার মনে হয় প্রায় পুরোটাই 90% গল্পের প্লট চেঞ্জ করা হয়েছে কেন তা আমার মাথায় ঢোকে নি। সত্যজিৎ রায়ের লেখা এই গল্পটি বিপিন চৌধুরীর স্মৃতিভ্রম অতটাও খারাপ নয় যে মূল গল্পটি কে ধরে কোন সিনেমা বানানো যাবেনা। আসল গল্পের বিপিন চৌধুরীর নামক এক ব্যবসায়ীর সাথে তার স্মৃতিকে মিথ্যে লোপ পাইয়ে কিভাবে তার এক বন্ধুর প্রতিশোধ নেবে সেই নিয়ে ঘটনা।
ফরগেট মি নট — এ স্মৃতি লোপ পেলেও প্রতিশোধের কারণ এবং গল্পের প্লট সম্পূর্ণ বদলানো হয়েছে এবং ব্যাপারটি প্রচন্ড বোরিং এবং অপ্রীতিকর প্রদর্শন হয়েছে।
বারীন ভৌমিক এর ব্যারাম
হাঙ্গামা হে কিউ বারপা
(3.5 / 5 )
এই গল্পের সিনেমাতে এক্টিং করেছে মনোজ বাজপাই এবং গাজরাজ রাও। এই সিনেমাটা মোটামুটি ভালো হয়েছে বলা যেতে পারে যদিও এর কারণ অনেকটাই মনোজ বাজপাই এবং গাজরাজ রাও এর পারফরম্যান্স।
ট্রেনের দুই যাত্রী দুজনের একটা ইতিহাস আছে এবং দুজনেরই চুরি করার একটি অদ্ভুত রোগ আছে কি হবে অবশেষে জানার জন্য অবশ্য সত্যজিৎ রায়ের লেখা গল্প বারিন ভৌমিকের ব্যারাম পড়া দরকার।
থ্রিলার এবং কমিটিতে ভরা এই গল্পটি বেশ মজাদার কিন্তু প্রদর্শন আরো ভালো হতে পারতো যদি এত হোচপোচ না করে সাধারণ প্রদর্শন করা যেত।
বহুরূপী
বহরুপিয়া
(3 / 5 )
এই সিনেমাতে লিড এ রয়েছেন কে কে মেনন তিনি একজন দুর্দান্ত অভিনেতা, পারফরমার এবং এক্সপ্রেশনিস্ট। এই গল্পটাও হয়তো কেঁচিয়ে যেত যদি না এটা কলকাতায় শুট করা হতো; সিনেমা শুরু থেকেই বোঝা যায় যে কে কে মেনন একজন মেকআপ আর্টিস্ট এবং অফিস কর্মচারী তবে তার নেশা প্রস্থেটিক যেটা ঘিরে যত কেলেঙ্কারি। সে হঠাৎ পেয়ে যায় প্রচুর সম্পত্তি এবং একটি বই যা ধীরে তার জীবনে পরিবর্তন আসে কি পরিবর্তন, নাকি অঘটন তা জানতে পড়তে হবে বহুরূপী।
সিনেমার দিক থেকে প্রদর্শন আরো ইন্টারেস্টিং হওয়া উচিত ছিল, কেকে মেনন এবং অন্যান্য অভিনেতারা তাদের এক্টিং এবং কলকাতায় শুটিং সিনেমাকে উৎরে দিয়েছে না হলে এর অবস্থা কি হতো অন্তরজামি জানেন।
স্পটলাইট
স্পটলাইট
(0.5 /5 )
তীব্র নিন্দা ও সমালোচনায় রাখছি এই সিনেমাটি কে, সত্যি বলতে কোন কিছুই ঠিক নেই এই সিনেমাটিতে। কোথায় আসল গল্প কোথায় এই সিনেমার গল্প একেবারে স্বর্গ থেকে পাতালে টেনে এনেছে এটাকে শ্রীজিৎ মুখার্জী। সত্যি বলতে গল্প, কাস্টিং, প্রদর্শন কোন কিছুই ঠিক হয়নি এই সিনেমাতে কি দরকার ছিল হার্ষভার্ধন কপুর কে কাস্ট করা, আরকি বলিউডে কোন অভিনেতা নেই। আসল গল্পটি পারলে পড়ে দেখবেন কি ছিল আর কি হয়েছে নিজেরাই বুঝতে পারবেন।
দেখুন সৃজিত মুখার্জী ” ray ” এক্ষেত্রে কেন এরকম করলেন জানিনা তবে নির্দেশক হিসেবে উনি মোটেই খারাপ নয় আজকের বাজারে বাংলায় যদি এক নম্বর বলে কেউ থেকে থাকে তবে তা শ্রীজিৎ মুখার্জী অনেক ভালো ভালো সিনেমা আমাদের উপহার দিয়েছেন তিনি তবে এইবার কি হলো জানিনা। তার আগের ওনার প্রথম OTT Platform এ কাজ ফেলুদার ছিন্নমস্তার অভিশাপ বেশ ভালই লেগেছে এবং আরো অনেক ভালো ভালো সিনেমা আছে যেমন বাইশে শ্রাবণ, হেমলক সোসাইটি, উমা, ভিঞ্চি দা ইত্যাদি। আশা করি তিনি তার ভুল শুধরে নিয়ে আমাদের ভবিষ্যতে ভালো ভালো সিনেমা উপহার দেবেন এবং তার পরবর্তী কাজ X=prem এর অপেক্ষায় থাকবো।
তিন জন নির্দেশক ই এর আগে অনেক ভালো কাজ আমাদের উপহার দিয়েছেন তবে এই বাড়ে কি হলো বুঝতে পারা যাচ্ছেনা; আমরা আশা করবো ভবিষ্যতে তারা আমাদের আরো ভালো সিনেমা উপহার দেবেন।
Review By
Suneet Adhikary